আগস্টের ৫ তারিখ সন্ধ্যায় চ্যানেল ২৪ এ প্রথম লাইভ শো টা অনুষ্ঠিত হয়। সময়টা ছিল সম্ভবত সাড়ে ৬ টা বা আরেকটু বেশি। ওটা ছিল একটা এক্সক্লুসিভ শো, অন্য কোনো চ্যানেলের কাছে যখনও কোনো হদিস ছিল না। নাহিদ আর আসিফ কোথায় আছে কেউ জানতো না। হাসনাত, সার্জিস ছিল আর্মির সাথে।
এএফপির অফিসে যাওয়ার পথে বিকালে কাওরানবাজার মোড়ে আর্মির চলন্ত কনভয়ে হাসনাতকে দেখি আমি। সেখানে জুনায়েদ সাকি ভাইও ছিল। আমরা ইগ্নোর করে এএফপির অফিসে চলে যাই। সেখানে গিয়ে শফিক ভাইকে জড়ায়ে ধরে আনন্দোল্লাস করি। তারপর হদিস পাই, নাহিদ, আসিফ সেখানে নাই। আশ্চর্যের সাথে আরও হদিস পাই যে, আমাদেরকে পথ দেখানো মাহফুজ আর নাসিরও এএফপির অফিসে ওঠেই নাই। কিছু না বলে ডিচ করে অফিসের নীচ থেকেই অন্য কোথাও চলে গেছে। হতভম্বের মতো বসে থাকি কতক্ষণ।
এ এক আশ্চর্য হীনমন্যতার নজির। দ্বিতীয়বারের মতো অবিশ্বাসের নিশানা। গুপ্ত শিবির সিনড্রোম। কাইন্ড অফ, সাবেক ভার্সেস বর্তমান। (এর দায় দরদের বিশ্লেষণ নিয়ে আরেকদিন লিখবো)।
যাইহোক, কিছুক্ষণ পর আসিফকে ফোন দিয়ে অদ্ভুতভাবে পেয়ে যাই। সে বলে, চ্যানেল ২৪ এ আসেন, তবে একা আসবেন, আর কাউকে আনবেন না। আমি আর বলি না যে, আমার সাথে সাদিক কায়েমও আছে। বরং তাকে টান দিয়ে দ্রুত গতিতে বের হয়ে যাই।
আমার পায়ের রগে টান লাগছিলো। হাটতে পারছিলাম না আর। দুপুর থেকে প্রচুর হেঁটেছি। চ্যানেল ২৪ এর লোকেশনের আগামাথা বুঝতেছিলাম না। কিছুদূর হাটার পর কাওরানবাজার কাঁচাবাজার থেকে এক অপিরিচিত বাইকওয়ালা ভাইকে অনেক রিকোয়েস্ট করে তার বাইকে চড়ে বসি দুজন।
লাইভ শো এর অল্প কিছুক্ষণ আগে আমি আর সাদিক সেখানে পৌঁছাই। গিয়ে দেখি নাহিদ, আসিফ, মাহফুজ, নাসির, আদিব আরিফ সহ আরও কয়েকজন আছে সেখানে।
কিছুক্ষণ বাদেই শুরু হয় লাইভ শো। হাসনাত, সার্জিস, বাকের, মোয়াজ্জেম, তারেক, হাসিবরা আসার আগেই নাহিদ, আসিফ গিয়ে চেয়ারে বসে। আমি চেয়েছিলাম সাদিককে ওদের পাশে বসাতে। এবং প্রাথমিকভাবে বসাইও। গণঅভ্যুত্থানে সাদিকের ভূমিকা ছিল গার্ডিয়ানশিপের মতো। যখন বাকিরা হতাশ হয়ে গেছিলো তখন প্রত্যেকটা ক্রিটিক্যাল মুহুর্তে সে আল্লাহর রহমত সাথে নিয়ে সমন্বয় করে গেছে। অসাধারণ সব সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। যেগুলো খুব কাছ থেকে দেখার, জানার সুযোগ হয়েছিলো আমার। তাই, অভ্যুত্থানে বিজয়ের পর সাদিকের ডার্ক নাইট হয়ে থাকার পরিবর্তে ঘোমটা অবমুক্ত হওয়াটা আমার কাছে খুবই যৌক্তিক একটা প্রত্যাশা মনে হয়েছিলো। সাদিককে ভরসা দিতে তাকে বসানোর পর আমি নিজেও তার পাশে বসে পড়েছিলাম।
মনে একটা ভয়ও ছিল হয়তো। আমরা কেউ ফেইস না হওয়ায় অপাঙতেয় হয়ে যাওয়ার ভয়। মাহফুজ আর নাসিরের অস্বস্তিজাত রিকোয়েস্টে শো শুরু হওয়ার আগে আমি আর সাদিক উঠে আসি। তাদেরই শর্তে, যে, আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আমরা থাকবো। (সেখানে অবশ্য পরে আরেক অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটে, যেটা অন্য সময় লিখবো)।
যাইহোক, ঐ লাইভ টেলিকাস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখনও আমাদের চূড়ান্ত বিজয় আসে নাই। ফ্যাসিস্ট এর পতন হয়েছে মাত্র। ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলুপ্ত হয় নাই। এই ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিলোপের মাধ্যমেই আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে।’ সেখান থেকে আসিফ মাহমুদ আরও ঘোষণা করেন, রাত ৮ টায় কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। এই রূপরেখা প্রনয়নে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নাগরিক সমাজ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করা হবে।
শো শেষ হওয়ার সাথে সাথেই চ্যানেল ২৪ এর আরেকটা কক্ষে গিয়ে ঢুকি আমি, নাহিদ, আসিফ আর নাসির। সেখানে আসিফ ফোন দেয় ড. ইউনুসকে। ঠিক সন্ধ্যা ৭টা ২৩ মিনিটের দিকে। ফোন দিয়ে নাহিদকে ধরিয়ে দেয় কথা বলার জন্য। আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, আপনারা ওকে কিনা। আমি তখন আবেগের বশে ঐতিহাসিক সেই মুহুর্ত টা ভিডিও করতে করতে চিল্লায়ে উঠি, আমরাই তো প্রথম এপ্রোচ করছিলাম উনাকে।
উল্লেখ্য, আগস্টের ৩ তারিখেই সাদিক কায়েম ফ্রান্সে থাকা ড. ইউনুসকে রিচ করেন লামিয়া মোর্শেদের মাধ্যমে।
আমি ফিসফিসিয়ে স্বগতোক্তি করলাম, ‘হিস্টরি…’
আগস্টের ৫ তারিখ সন্ধ্যায় চ্যানেল ২৪ এ প্রথম লাইভ শো টা অনুষ্ঠিত হয়। সময়টা ছিল সম্ভবত সাড়ে ৬ টা বা আরেকটু বেশি। ওটা ছিল একটা এক্সক্লুসিভ শো, অন্য কোনো চ্যানেলের কাছে যখনও কোনো হদিস ছিল না। নাহিদ আর আসিফ কোথায় আছে কেউ জানতো না। হাসনাত, সার্জিস ছিল আর্মির সাথে।
এএফপির অফিসে যাওয়ার পথে বিকালে কাওরানবাজার মোড়ে আর্মির চলন্ত কনভয়ে হাসনাতকে দেখি আমি। সেখানে জুনায়েদ সাকি ভাইও ছিল। আমরা ইগ্নোর করে এএফপির অফিসে চলে যাই। সেখানে গিয়ে শফিক ভাইকে জড়ায়ে ধরে আনন্দোল্লাস করি। তারপর হদিস পাই, নাহিদ, আসিফ সেখানে নাই। আশ্চর্যের সাথে আরও হদিস পাই যে, আমাদেরকে পথ দেখানো মাহফুজ আর নাসিরও এএফপির অফিসে ওঠেই নাই। কিছু না বলে ডিচ করে অফিসের নীচ থেকেই অন্য কোথাও চলে গেছে। হতভম্বের মতো বসে থাকি কতক্ষণ।
এ এক আশ্চর্য হীনমন্যতার নজির। দ্বিতীয়বারের মতো অবিশ্বাসের নিশানা। গুপ্ত শিবির সিনড্রোম। কাইন্ড অফ, সাবেক ভার্সেস বর্তমান। (এর দায় দরদের বিশ্লেষণ নিয়ে আরেকদিন লিখবো)।
যাইহোক, কিছুক্ষণ পর আসিফকে ফোন দিয়ে অদ্ভুতভাবে পেয়ে যাই। সে বলে, চ্যানেল ২৪ এ আসেন, তবে একা আসবেন, আর কাউকে আনবেন না। আমি আর বলি না যে, আমার সাথে সাদিক কায়েমও আছে। বরং তাকে টান দিয়ে দ্রুত গতিতে বের হয়ে যাই।
আমার পায়ের রগে টান লাগছিলো। হাটতে পারছিলাম না আর। দুপুর থেকে প্রচুর হেঁটেছি। চ্যানেল ২৪ এর লোকেশনের আগামাথা বুঝতেছিলাম না। কিছুদূর হাটার পর কাওরানবাজার কাঁচাবাজার থেকে এক অপিরিচিত বাইকওয়ালা ভাইকে অনেক রিকোয়েস্ট করে তার বাইকে চড়ে বসি দুজন।
লাইভ শো এর অল্প কিছুক্ষণ আগে আমি আর সাদিক সেখানে পৌঁছাই। গিয়ে দেখি নাহিদ, আসিফ, মাহফুজ, নাসির, আদিব আরিফ সহ আরও কয়েকজন আছে সেখানে।
কিছুক্ষণ বাদেই শুরু হয় লাইভ শো। হাসনাত, সার্জিস, বাকের, মোয়াজ্জেম, তারেক, হাসিবরা আসার আগেই নাহিদ, আসিফ গিয়ে চেয়ারে বসে। আমি চেয়েছিলাম সাদিককে ওদের পাশে বসাতে। এবং প্রাথমিকভাবে বসাইও। গণঅভ্যুত্থানে সাদিকের ভূমিকা ছিল গার্ডিয়ানশিপের মতো। যখন বাকিরা হতাশ হয়ে গেছিলো তখন প্রত্যেকটা ক্রিটিক্যাল মুহুর্তে সে আল্লাহর রহমত সাথে নিয়ে সমন্বয় করে গেছে। অসাধারণ সব সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। যেগুলো খুব কাছ থেকে দেখার, জানার সুযোগ হয়েছিলো আমার। তাই, অভ্যুত্থানে বিজয়ের পর সাদিকের ডার্ক নাইট হয়ে থাকার পরিবর্তে ঘোমটা অবমুক্ত হওয়াটা আমার কাছে খুবই যৌক্তিক একটা প্রত্যাশা মনে হয়েছিলো। সাদিককে ভরসা দিতে তাকে বসানোর পর আমি নিজেও তার পাশে বসে পড়েছিলাম।
মনে একটা ভয়ও ছিল হয়তো। আমরা কেউ ফেইস না হওয়ায় অপাঙতেয় হয়ে যাওয়ার ভয়। মাহফুজ আর নাসিরের অস্বস্তিজাত রিকোয়েস্টে শো শুরু হওয়ার আগে আমি আর সাদিক উঠে আসি। তাদেরই শর্তে, যে, আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আমরা থাকবো। (সেখানে অবশ্য পরে আরেক অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটে, যেটা অন্য সময় লিখবো)।
যাইহোক, ঐ লাইভ টেলিকাস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখনও আমাদের চূড়ান্ত বিজয় আসে নাই। ফ্যাসিস্ট এর পতন হয়েছে মাত্র। ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলুপ্ত হয় নাই। এই ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিলোপের মাধ্যমেই আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে।’ সেখান থেকে আসিফ মাহমুদ আরও ঘোষণা করেন, রাত ৮ টায় কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। এই রূপরেখা প্রনয়নে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নাগরিক সমাজ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করা হবে।
শো শেষ হওয়ার সাথে সাথেই চ্যানেল ২৪ এর আরেকটা কক্ষে গিয়ে ঢুকি আমি, নাহিদ, আসিফ আর নাসির। সেখানে আসিফ ফোন দেয় ড. ইউনুসকে। ঠিক সন্ধ্যা ৭টা ২৩ মিনিটের দিকে। ফোন দিয়ে নাহিদকে ধরিয়ে দেয় কথা বলার জন্য। আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, আপনারা ওকে কিনা। আমি তখন আবেগের বশে ঐতিহাসিক সেই মুহুর্ত টা ভিডিও করতে করতে চিল্লায়ে উঠি, আমরাই তো প্রথম এপ্রোচ করছিলাম উনাকে।
উল্লেখ্য, আগস্টের ৩ তারিখেই সাদিক কায়েম ফ্রান্সে থাকা ড. ইউনুসকে রিচ করেন লামিয়া মোর্শেদের মাধ্যমে।
আমি ফিসফিসিয়ে স্বগতোক্তি করলাম, ‘হিস্টরি…’