গাছের যত্নে ডিমের খোসা এভাবে ব্যবহার করতে পারেন
ছাদবাগান হোক কিংবা বারান্দা, বাড়ির পাশের শখের বাগানেও গাছেদের বেড়ে ওঠা দেখতে ভালো লাগে। গাছের ফলন ঠিক রাখতে বা পর্যাপ্ত ফুল পেতে আমরা নানা রকম সার ব্যবহার বা পরিচর্যা করে থাকি। তবে টাকা খরচ না করেও প্রতিদিনের ডিমের খোসা সংরক্ষণ করে গাছের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন।
গাছের যত্নে ডিমের খোসা এভাবে ব্যবহার করতে পারেন
মাটি ও পানির পাশাপাশি গাছের পুষ্টির চাহিদা পূরণে এই ফেলনা জিনিসও (ডিমের খোসা) ব্যবহার করতে পারেন। গাছের যত্নে ডিমের খোসা বাজারের বিভিন্ন রাসায়নিকের চেয়ে কার্যকর। গাছের বৃদ্ধিতে ও ক্ষতিকর পোকামাকড় দূর করতে এটি ‘প্রাকৃতিক ওষুধ’ হিসেবে কাজ করে। তাই ডিমের খোসাগুলো জমিয়ে একটা জালি ব্যাগে ভরে বাগানে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এবার জেনে নিন এভাবে ডিমের খোসা রাখার উপকারিতা সম্বন্ধে।
১. গাছের বৃদ্ধিতে পুষ্টির জোগান
ডিমের খোসা হলো ক্যালসিয়ামের প্রাকৃতিক উৎস। গাছের কোষের দৃঢ় ও মজবুত গড়নের জন্য এটি জরুরি। দিনের পর দিন জালি থলে থেকে অল্প অল্প করে শুকনো ডিমের খোসা মাটিতে পড়বে। আর মাটিতে ধীরে ধীরে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি বাড়বে। ফলে গাছগুলো পরিমিত পুষ্টি পাবে। সুতরাং ফেলনা এই ডিমের খোসা বাজারের পাওয়া কৃত্রিম রাসায়নিকের চেয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বাগানে অনেক ভালো ফল দেবে।
২. পোকামাকড় প্রতিরোধক
সাধারণত শখের বাগানে কেউ কীটনাশক ব্যবহার করতে চান না। আবার অনেকে পরিবেশের ক্ষতির কথা ভেবে ছাদবাগান বা বারান্দার বাগানে ইচ্ছা করেই রাসায়নিক ব্যবহার করেন না। আর এর সুযোগেই ছোট ছোট পোকামাকড় বাগানে বংশবিস্তার করে।
এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে পোকামাকড় দমন করতে ডিমের খোসা কার্যকর। শুকনা গুঁড়া করা ডিমের খোসার ধারালো প্রান্ত থাকে, যা নরম শরীরের পোকামাকড়ের বংশবিস্তারের জন্য অনুপযোগী। অর্থাৎ বাগানে ডিমের খোসার কিছুটা হাত দিয়ে গুঁড়া করে ছিটিয়ে দিলে বা জালি ব্যাগে ঝুলিয়ে রাখলে প্রাকৃতিক ও নিরাপদ উপায়ে পোকামাকড় ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এভাবে পোকার হাত থেকে গাছ বাঁচানো সম্ভব।
মাটির উর্বরতা বাড়ায় ডিমের খোসা
৩. কম্পোস্ট সারের পুষ্টিগুণ বাড়ায়
ডিমের খোসা শুধু গাছে সরাসরি ব্যবহারেই নয় বরং কম্পোস্ট সারের সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়। ডিমের খোসার ক্যালসিয়ামের মাইক্রোবিয়াল কার্যকারিতা (ক্যালসিয়াম যৌগ) কম্পোস্ট সারের সঙ্গে মিশে সারের গুণাগুণ আরও বাড়িয়ে তোলে। এই পুষ্টিসমৃদ্ধ সার গাছের প্রয়োজনীয় সব চাহিদা মেটায় এবং গাছকে সুস্থ ও মজবুত করে তোলে।
৪. মাটির অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য
বাগানের মাটির অম্লত্ব বেশি হলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। আজকাল দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মাটিতে অম্লত্বও বেড়ে যাচ্ছে। গাছের ফলন বাড়াতে তাই বাগানের মাটিতে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য বা পিএইচের ভারসাম্য আনা খুব জরুরি। ডিমের খোসা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
ডিমের খোসায় আছে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট যা প্রাকৃতিকভাবেই অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখে। ক্যালসিয়াম কার্বোনেট প্রাকৃতিকভাবেই মাটির অম্লতা নিষ্ক্রিয় করে এবং মাটিকে আরও বেশি অ্যালকালাইন (ক্ষারীয়) করে তোলে। সুতরাং ডিমের খোসা ব্যবহারে বাগানের মাটি ও ফসল দুটোই প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবেশবান্ধব আর স্বাস্থ্যকর হয়।
৫. অপচয় কম, পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন
ডিম তো খাওয়া হয়ই। তাই বাগানে ডিমের খোসা ব্যবহারে একই সঙ্গে অপচয় কমে এবং দীর্ঘ ফলনের নিশ্চয়তা মেলে। অধুনা জীবনযাপনে কোনো পণ্যের রিসাইক্লিংয়ের (পুনর্ব্যবহারের) যে স্লোগান উঠেছে, তার সঙ্গেও একাত্ম হতে পারেন।
ডিমের খোসা আবার কাজে লাগিয়ে টেকসই জীবনধারাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই সব ছোট অভ্যাসই আমাদের আরও পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনে উৎসাহিত করে।
ফলের বাগানে পোকামাকড় কমাতে ভুমিকা রাখে ডিমের খোসা। ছবিতে রামবুটানের বাগান
করলার রস প্রাকৃতিকভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করে
৬. পাখিদের আকর্ষণ
যাঁরা বড় আকারে ফলের বাগান গড়ে তোলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই পাখি বা ফুলের পরাগায়নে পাখির ভূমিকার বিষয়ে জানেন। বাগানে থাকা ডিমের খোসা পাখিদের দ্রুত আকর্ষণ করে। বিশেষ করে পাখির বংশবিস্তারের জন্য ডিম পাড়ার সময় প্রচুর ক্যালসিয়ামের দরকার হয়।
বাগানের আশপাশে যদি ডিমের খোসা থাকে, তাহলে সেখানে পাখি আসবে আর পরাগায়নে সাহায্য করবে। বাগানের জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় (গুটিপোকা, শুঁয়াপোকা ইত্যাদি) পাখিরা খেয়ে নেয়, এতে বাগানের বাস্তুতন্ত্র ঠিক থাকে।
৭. মাটির উর্বরতা
ডিমের খোসা মাটির সঙ্গে মিশে মাটির মাইক্রোবিয়াল কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ডিমের খোসা থেকে মিনারেল সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়, মাটির জন্য উপকারী ক্ষুদ্র উপাদানগুলোর পরিমাণ দ্রুত বাড়িয়ে তোলে। এটি মাটিকে উর্বর করে। ডিমের খোসা মাটির নিচের বাস্তুতন্ত্র সুশৃঙ্খল করে গাছের সঠিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ডিমের খোসার থলে যেভাবে ঝোলাবেন
ডিম খাওয়ার পর খোসাগুলো ধুয়ে শুকিয়ে রাখুন। যেন উৎকট কোনো গন্ধ না থাকে আর ছত্রাক না পড়ে। এরপর শুকনো খোসাগুলো হালকা ভেঙে নিন। বায়ু চলাচল করতে পারে এমন একটা জালি ব্যাগে খোসাগুলো ভরে বাগানে রাখুন। বাগানের যে অংশের মাটিতে বেশি উর্বরতা ও ক্যালসিয়াম দরকার, সেখানে থলেটি ঝুলিয়ে দিতে হবে। কোনো গাছের ডালে বা লাঠিতে ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
গাছের যত্নে ডিমের খোসা এভাবে ব্যবহার করতে পারেন
ছাদবাগান হোক কিংবা বারান্দা, বাড়ির পাশের শখের বাগানেও গাছেদের বেড়ে ওঠা দেখতে ভালো লাগে। গাছের ফলন ঠিক রাখতে বা পর্যাপ্ত ফুল পেতে আমরা নানা রকম সার ব্যবহার বা পরিচর্যা করে থাকি। তবে টাকা খরচ না করেও প্রতিদিনের ডিমের খোসা সংরক্ষণ করে গাছের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন।
গাছের যত্নে ডিমের খোসা এভাবে ব্যবহার করতে পারেন
মাটি ও পানির পাশাপাশি গাছের পুষ্টির চাহিদা পূরণে এই ফেলনা জিনিসও (ডিমের খোসা) ব্যবহার করতে পারেন। গাছের যত্নে ডিমের খোসা বাজারের বিভিন্ন রাসায়নিকের চেয়ে কার্যকর। গাছের বৃদ্ধিতে ও ক্ষতিকর পোকামাকড় দূর করতে এটি ‘প্রাকৃতিক ওষুধ’ হিসেবে কাজ করে। তাই ডিমের খোসাগুলো জমিয়ে একটা জালি ব্যাগে ভরে বাগানে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এবার জেনে নিন এভাবে ডিমের খোসা রাখার উপকারিতা সম্বন্ধে।
১. গাছের বৃদ্ধিতে পুষ্টির জোগান
ডিমের খোসা হলো ক্যালসিয়ামের প্রাকৃতিক উৎস। গাছের কোষের দৃঢ় ও মজবুত গড়নের জন্য এটি জরুরি। দিনের পর দিন জালি থলে থেকে অল্প অল্প করে শুকনো ডিমের খোসা মাটিতে পড়বে। আর মাটিতে ধীরে ধীরে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি বাড়বে। ফলে গাছগুলো পরিমিত পুষ্টি পাবে। সুতরাং ফেলনা এই ডিমের খোসা বাজারের পাওয়া কৃত্রিম রাসায়নিকের চেয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বাগানে অনেক ভালো ফল দেবে।
২. পোকামাকড় প্রতিরোধক
সাধারণত শখের বাগানে কেউ কীটনাশক ব্যবহার করতে চান না। আবার অনেকে পরিবেশের ক্ষতির কথা ভেবে ছাদবাগান বা বারান্দার বাগানে ইচ্ছা করেই রাসায়নিক ব্যবহার করেন না। আর এর সুযোগেই ছোট ছোট পোকামাকড় বাগানে বংশবিস্তার করে।
এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে পোকামাকড় দমন করতে ডিমের খোসা কার্যকর। শুকনা গুঁড়া করা ডিমের খোসার ধারালো প্রান্ত থাকে, যা নরম শরীরের পোকামাকড়ের বংশবিস্তারের জন্য অনুপযোগী। অর্থাৎ বাগানে ডিমের খোসার কিছুটা হাত দিয়ে গুঁড়া করে ছিটিয়ে দিলে বা জালি ব্যাগে ঝুলিয়ে রাখলে প্রাকৃতিক ও নিরাপদ উপায়ে পোকামাকড় ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এভাবে পোকার হাত থেকে গাছ বাঁচানো সম্ভব।
মাটির উর্বরতা বাড়ায় ডিমের খোসা
৩. কম্পোস্ট সারের পুষ্টিগুণ বাড়ায়
ডিমের খোসা শুধু গাছে সরাসরি ব্যবহারেই নয় বরং কম্পোস্ট সারের সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়। ডিমের খোসার ক্যালসিয়ামের মাইক্রোবিয়াল কার্যকারিতা (ক্যালসিয়াম যৌগ) কম্পোস্ট সারের সঙ্গে মিশে সারের গুণাগুণ আরও বাড়িয়ে তোলে। এই পুষ্টিসমৃদ্ধ সার গাছের প্রয়োজনীয় সব চাহিদা মেটায় এবং গাছকে সুস্থ ও মজবুত করে তোলে।
৪. মাটির অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য
বাগানের মাটির অম্লত্ব বেশি হলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। আজকাল দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মাটিতে অম্লত্বও বেড়ে যাচ্ছে। গাছের ফলন বাড়াতে তাই বাগানের মাটিতে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য বা পিএইচের ভারসাম্য আনা খুব জরুরি। ডিমের খোসা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
ডিমের খোসায় আছে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট যা প্রাকৃতিকভাবেই অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখে। ক্যালসিয়াম কার্বোনেট প্রাকৃতিকভাবেই মাটির অম্লতা নিষ্ক্রিয় করে এবং মাটিকে আরও বেশি অ্যালকালাইন (ক্ষারীয়) করে তোলে। সুতরাং ডিমের খোসা ব্যবহারে বাগানের মাটি ও ফসল দুটোই প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবেশবান্ধব আর স্বাস্থ্যকর হয়।
৫. অপচয় কম, পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন
ডিম তো খাওয়া হয়ই। তাই বাগানে ডিমের খোসা ব্যবহারে একই সঙ্গে অপচয় কমে এবং দীর্ঘ ফলনের নিশ্চয়তা মেলে। অধুনা জীবনযাপনে কোনো পণ্যের রিসাইক্লিংয়ের (পুনর্ব্যবহারের) যে স্লোগান উঠেছে, তার সঙ্গেও একাত্ম হতে পারেন।
ডিমের খোসা আবার কাজে লাগিয়ে টেকসই জীবনধারাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই সব ছোট অভ্যাসই আমাদের আরও পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনে উৎসাহিত করে।
ফলের বাগানে পোকামাকড় কমাতে ভুমিকা রাখে ডিমের খোসা। ছবিতে রামবুটানের বাগান
করলার রস প্রাকৃতিকভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করে
৬. পাখিদের আকর্ষণ
যাঁরা বড় আকারে ফলের বাগান গড়ে তোলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই পাখি বা ফুলের পরাগায়নে পাখির ভূমিকার বিষয়ে জানেন। বাগানে থাকা ডিমের খোসা পাখিদের দ্রুত আকর্ষণ করে। বিশেষ করে পাখির বংশবিস্তারের জন্য ডিম পাড়ার সময় প্রচুর ক্যালসিয়ামের দরকার হয়।
বাগানের আশপাশে যদি ডিমের খোসা থাকে, তাহলে সেখানে পাখি আসবে আর পরাগায়নে সাহায্য করবে। বাগানের জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় (গুটিপোকা, শুঁয়াপোকা ইত্যাদি) পাখিরা খেয়ে নেয়, এতে বাগানের বাস্তুতন্ত্র ঠিক থাকে।
৭. মাটির উর্বরতা
ডিমের খোসা মাটির সঙ্গে মিশে মাটির মাইক্রোবিয়াল কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ডিমের খোসা থেকে মিনারেল সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়, মাটির জন্য উপকারী ক্ষুদ্র উপাদানগুলোর পরিমাণ দ্রুত বাড়িয়ে তোলে। এটি মাটিকে উর্বর করে। ডিমের খোসা মাটির নিচের বাস্তুতন্ত্র সুশৃঙ্খল করে গাছের সঠিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ডিমের খোসার থলে যেভাবে ঝোলাবেন
ডিম খাওয়ার পর খোসাগুলো ধুয়ে শুকিয়ে রাখুন। যেন উৎকট কোনো গন্ধ না থাকে আর ছত্রাক না পড়ে। এরপর শুকনো খোসাগুলো হালকা ভেঙে নিন। বায়ু চলাচল করতে পারে এমন একটা জালি ব্যাগে খোসাগুলো ভরে বাগানে রাখুন। বাগানের যে অংশের মাটিতে বেশি উর্বরতা ও ক্যালসিয়াম দরকার, সেখানে থলেটি ঝুলিয়ে দিতে হবে। কোনো গাছের ডালে বা লাঠিতে ঝুলিয়ে দিতে পারেন।